স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতের আহমেদাবাদে অবস্থিত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে আজ ‘সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ’কে হেসেখেলে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সহজেই আগাম আইপিএল এর ফাইনালে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়েছে ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’।
টসে জয়লাভ করে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে হায়দ্রাবাদের এর হয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৩ ওভারে অলআউট হয়ে ১৫৯ রান করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে সেই রান তাড়া করতে নেমে কলকাতা নাইটরাইডার্স এর হয়ে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৫১*) ও শ্রেয়াস আইয়ার (৫৮*) এর করা জোড়া ফিফটিতে ৮ উইকেট হাতে রেখে ৩৮ বল বাকী থাকতেই সহজ জয় তুলে নেয় কলকাতা।
সদ্য অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া এবারের আইপিএল এর প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে ‘কলকাতা নাইটরাইডার্স’ এর বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে এমন শোচনীয়ভাবে হেরে যাওয়ার মধ্যদিয়ে সহজে চলমান ‘ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ ২০২৪’ তথা ‘আইপিএল’ এর এবারের আসরে প্রথম ফাইনালিস্ট দল হিসেবে আগাম ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার বিশেষ সুযোগ যে হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে ‘সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ’ এর তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যদিও নিয়মানুসারে ‘সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ’ এর হাতে দ্বিতীয় ও সর্বশেষ আরো একটি সুযোগ রয়েছে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট দল হিসেবে ফাইনালে পৌঁছে আবারো ‘কলকাতা নাইটরাইডার্স’ এর মুখোমুখি হওয়ার। অর্থাৎ, আইপিএল এর চলমান এবারের এই আসরে ‘সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ’ এর ফাইনালে উঠার লড়াই কিংবা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা কোনোটাই এখনো ফুরিয়ে যায়নি।
যদিও দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি তুলনামূলক কিছুটা কঠিন, তবে কোনোভাবেই অসম্ভব কিছু নয়। কারণ এরূপ প্রেক্ষাপটে আইপিএল এর বিগত আসর গুলোতে ঘটে যাওয়া বিশেষ ঘটনাবলী, ইতিহাস ও তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনো ঘটনার খোঁজ মিলেছে, যা আইপিএল এর মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এমন যেকোনো লীগে ’সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ’ এর মতো প্রথম সারীর কোনো দলের ক্ষেত্রে কখনো অনুরূপ গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে একের পর এক অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পাশাপাশি করে যাওয়া অনিচ্ছাকৃত অথবা অপ্রত্যাশিত এক বা একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের প্রেক্ষিতে অযথা সহজ কোনো বিশেষ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার মতো অঘটন ঘটলে এনিয়ে তীব্র হতাশায় ভুগতে থাকাকালীন সময়ে উক্ত দলটিকে ঘুরে দাড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগাতে যথেষ্ট।
তবে আপাতদৃষ্টিতে একটানা পর পর দুটি ম্যাচে জয়লাভ করার মধ্যদিয়ে অবশিষ্ট কঠিন সুযোগটি কাজে লাগিয়ে সফল হওয়াটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসম্ভব বলে মনে হয় এবং সুযোগটি চরমভাবে অবহেলিত হয়। আর সত্যি বলতে কখনো এমন প্রতিকূল কোনো পরিস্থিতির স্বীকার হতে হলে সেসময় সাধারণত যে ধরনের তীব্র মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, অধিকাংশ খেলোয়াড়ের পক্ষেই তা ঠিকঠাক সামলে উঠতে পারাটা এতটা সহজে সম্ভব হয়ে উঠেনা। অনেকে তখন সঠিক ও উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতও ব্যর্থ হয়। আবার এমন সময় অনেককে একরকম বাধ্য হয়েই হয়তো কেবল নিয়মানুসারে খেলতে বাধ্য বিধায় উল্লেখিত ম্যাচে নিয়ম রক্ষার্থে অংশগ্রহণের মতো সিদ্ধান্ত নিতেও দেখা যায়। যদিও সত্যিকার অর্থে কোনো খেলোয়াড়ই ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চায়না। কখনো কখনো এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যদিয়ে সাধারণত প্রায় সকল পেশাদার খেলোয়াড়েরাই নিজেদের পেশাদারিত্ব ও নীতিগত আদর্শের জায়গা থেকে “খেলায় অংশগ্রহণ করে হার-জিত অর্জিত হোক যাহাই, যেকোনো মূল্যে একেবারে শেষপর্যন্ত লড়াইটা অন্তত করে যেতে চাই” এই মর্মে যে নীতি অনুসরণ করে, হোক পুরোপুরি অপরিকল্পিত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে নিজের অজান্তেই কিংবা সবকিছু জেনে-বুঝে একেবারে শুরুতেই লড়াকু মানসিকতার বিপরীতে যেয়ে স্বেচ্ছায় আগাম পরাজয় বরণ করে নেয়ার মাতো এমন অতি সাধারণ একটি নীতিগত আদর্শ বহির্ভূত সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়।
তবে ইতিহাসে লক্ষ করলে দেখে যায়, ‘ইতিপূর্বে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে একচেটিয়াভাবে আইপিএল মাতানো এবং পুরো আসর জুড়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা শক্তিশালী একটি দল তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের কাছে প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে লজ্জাজনক ভাবে হেরে গিয়েছিল। এরপর ম্যাচ শেষে প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই দলের অধিনায়ক তেমন কিছু বলতে না চেয়ে কেবল অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের সেরাটা উজার করে দিয়ে আগামী ম্যাচে পূর্বের চেয়েও শক্তিশালী দল হিসেবে ফেরার ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি এখনো তার দলের ফাইনালে উঠার সুযোগ, সামর্থ্য এবং প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। অতঃপর ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে অবশিষ্ট দ্বিতীয় সুযোগ কাজে লাগিয়ে তার দল একটানা পর পর দুটি ম্যাচে জয়লাভ করে ফাইনালে উঠার মধ্যদিয়ে ভক্তদের নিরাশ না করেই থেকে যায়নি। সেই প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে হেরে যাওয়া দলটিই এমন তীব্র শক্তি সঞ্চিত করে সফলভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল যে, দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট দল হিসেবে আইপিএল এর ফাইনালে উঠার পরবর্তীতে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা জিতে নিতেও সক্ষম হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এলিমিনেটর ম্যাচে জয়ী দল আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ এর মুখোমুখি হবে। অতঃপর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জয়ী দল আগামী ২৬ মে ফাইনালে মুখোমুখি হবে কলকাতা নাইটরাইডার্সের।
এফএআই/ক্রিড়া প্রতিবেদক/আহমেদাবাদ/তিতাস টাইমস২৪







0 মন্তব্যসমূহ